মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র জিজ্ঞেস করলেন,” বলতো তো গোপাল, সত্য থেকে মিথ্যার দূরত্ব কত দূরে?”
গোপাল ভাঁড় নিবেদন করলেন, “আজ্ঞে মহারাজ, এদের দূরত্ব খুবই কম।”
গর্জে উঠলেন কৃষ্ণচন্দ্র,”তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?”
“অপরাধ মার্জনা করবেন, মহারাজ। প্রভুর চোখ থেকে কান যত দূরে সত্য থেকে মিথ্যার দূরত্ব তার বেশি নয়। কানে যা শোনা যায় তার বেশির ভাগই সত্য নয়। চোখে যা দেখা যায় তা হল সত্য।”
গোপালের জবাবও আসলে সঠিক নয়। যা চোখে দেখা যায় তা সবই সত্য নয়। দৃশ্যমানের পেছনে রয়ে যায় সত্যের অনেক অলখ মাত্রা। অনেক দুর্জ্ঞেয় সত্য কখনো দেখা যায় না; এরা লুকিয়ে আছে অন্ধকারের অতলে। আবার কখনো কখনো জগত ও জীবনের চরম সত্য উন্মোচিত হয়, রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘ অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো’ রূপে। জীবনের অনেক সত্যই আলোয় উদ্ভাসিত নয়। এরা রয়ে গেছে প্রহেলিকা আর রহস্য রূপে অজ্ঞানতার তিমিরের মোড়কে আবৃত। তবু এ অন্ধকারের মাঝেই মানুষ আলোর উপলব্ধিতে ধন্য হয়েছে।
~~~~~~~~
তথ্যসূত্রঃ অন্ধকারের উৎস হতে (বই)
লেখকঃ আকবর আলি খান, সাবেক কেবিনেট সচিব।