ভারতবর্ষে মুদ্রার ক্রমবিকাশ

বিনিময় প্রথার শুরুর প্রথম দিকে দ্রব্যের পরিবর্তে দ্রব্যের বিনিময় হত। কিন্তু তাতে হিসেবের গড়মিল হওয়ার সম্ভাবনাকে চিন্তা করে টাকা-কড়ির উদ্ভব হয়।

তখন থেকে শুরুতেই সমুদ্রের কড়ি ছিলো বিনিময়ের মাধ্যম। সে সময় কড়ির হিসেব ছিলো

>চার কড়িতে এক গন্ডা
>কুড়ি গন্ডায় এক পণ
>ষোল পণে এক কাহন
>চার কাহনে এক টাকা

আর টাকা শব্দটি এসেছে টঙ্ক বা টঙ্কক থেকে। টঙ্ক কথাটার অর্থ হলো ছেনি! ছেনি দিয়ে রুপার পাত কেটে কেটে যা তৈরি করা হতো তা টঙ্কা নামে পরিচিত ছিলো। সেখানে আবার বিভিন্ন নকশা না চিহ্ন কেটে দেওয়া হতো।

সংস্কৃত বিংশক শব্দটি হিসেব করা হতো- কুড়ির এক চতুর্থাংশকে।

রাজস্থানে ‘পসীবা’ নামে মুদ্রার প্রচলন ছিল। হিসাব করা হতো চার পসীবা এক বিংশকের সমান।
একটি রুপার টাকার সমান ছিলো এক বিংশক।
পসীবা ক্রমে পরিবর্তিত হতে হতে পয়সা হয়। অর্থাৎ পসীবা- পাইসা- পৈসা-পয়সা।

আবুল ফজলের লিখিত আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে বলা হয় চল্লিশটি ‘আকবরি’ ছিলো এক রুপিয়ার সমান। ‘আকবরি’ আবার ‘দাম’ নামেও পরিচিত ছিলো। অর্থাৎ চল্লিশটির দাম ছিলো এক রুপিয়ার সমান।

তামার পয়সার ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম ওজন সমান ছিলো না ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একশ’ গ্রেন ওজন নির্ধারণ করে দেয়।
সে সময় ধার্য করা হয় এক টাকা হবে চৌষট্টি পয়সায়।

তবে স্বাধীন দেশের রাজারা নিজস্ব এলাকায় মুদ্রার মান হেরফের করতেন।

১৭শ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির পয়সার হিসাব ছিলো এক রুপিয়া সমান আশি পয়সার সমান।
পরে তারা ‘আনা’ প্রবর্তন করে। ষোল আনায় ছিলো এক টাকা। আর পয়সার এক তৃতীয়াংশ ছিলো ‘পাই’। আর তখন সোনার মুদ্রারও প্রচলন ছিলো ‘মোহর’ নামে।
> ষোল টাকায় ছিলো এক মোহর।

আর একটি তথ্য, মুঘল আমলেও ‘পাই’ এবং ‘মোহরের’ প্রচলন ছিলো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Writer: Shaahrin Chowdhury

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *