লাত, উজ্জা আর মানাত ছিলো কাবাঘরে অবস্থিত মূর্তি।
আইয়ামে জাহিলিয়াতে কাবার ভেতর রক্ষিত ৩৬০ টি মূর্তির মাঝে এ তিনজনকে স্রষ্টার তিন কন্যা হিসেবে মনে করা হতো।
তিনজনের জন্য আবার আলাদা আলাদা করে মন্দিরও নির্মিত হয়েছিলো।
লাত অধিষ্ঠিত হয়েছিলো তা’য়িফ এলাকার কাছাকাছি স্থানে যেখানে মক্কা ও আশেপাশের অন্যান্য অঞ্চলের লোকেরা সেখানে পূজা করতে আসতো।
মেসোপোটেমিয়াবাসীদের কাছে লাত ছিলেন পাতালের দেবী। ‘এরেশকিগাল’ নামে পরিচিত যিনি।
তবে তাকে ‘আল-লাত’ বা ‘আল্লাতু’ বলে ডাকা হতো কার্থেজে।
গ্রীকদের কাছে লাত পরিচিত ছিলো ‘এ্যাথেনা’ এবং রোমানদের কাছে ছিলো ‘মির্নাভা’ হিসেবে।
যদিও খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকে গ্রীক ঐতিহাসিক হেরাডোটাস লাতকে ‘আফ্রোদিতি’ হিসেবে পরিচিত করান।
উজ্জা ছিলো কুরাইশদের কাছে সর্বাপেক্ষা বেশি শ্রদ্ধার। সে ছিলো সুরক্ষা ও প্রেমের দেবী।
গ্রীকবাসী উজ্জাকে ‘আফ্রোদিতি’ ও রোমানরা ‘ভেনাস’ বলে সম্বোধন করত।
মানাত ছিলো ভাগ্যদেবী। গ্রেকোরোমান দেবী ‘নেমেসিস’ ছিলো এ মানাত।
কুদায়িদের নিকটবর্তী সমুদ্র উপকূলে ছিলো তার মন্দির। যা মক্কা মদীনার কুবেদ নামক স্থানে অবস্থিত।
এ মন্দিরে একটি কৃষ্ণ প্রস্তর রক্ষিত ছিলো।
পেত্রাবাসীদের কাছে পূজিত ছিলো মানাত এবং মদীনার আউস ও খাযরাজ গোত্রের লোকজন দেবী মানাতের প্রতি সর্বাপেক্ষা বেশি সম্মান প্রদর্শন করতো।
কাবা শরীফে সর্বপ্রধান দেবের নাম ছিল #হুবল। হুবলকে মনে করা হতো মানাতের স্বামী। তার মূর্তির পাশে থাকতো তীর ধণুক যা দিয়ে ভাগ্য নির্ধারণের কাজে ব্যবহৃত হতো।
পবিত্র কোরআনের #সূরানজমে লাত, উজ্জা ও মানাতের ব্যাপারে বলা হয়েছে।
তোমরা কি ভেবে দেখেছ ( তোমাদের দেবী) লাত, উজ্জা ও মানাত সম্পর্কে? তোমরা কি মনে করো, তোমাদের জন্যে পুত্র সন্তান আর আল্লাহর জন্যে শুধু কন্যাসন্তান? এরকম ভাগবাটোয়ারা তো নেহায়েত অন্যায়! আসলে এগুলোতো স্রেফ কতগুলো নাম, যা তোমাদের বাপদাদারা ও তোমরা রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন সনদ নাজিল করেন নি। তোমরা তো ভ্রান্ত অনুমান ও তোমাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করছ।
অথচ তোমাদের কাছে এখন তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে পথনির্দেশ এসেছে।
(আয়াতঃ১৯-২৩)
পরবর্তীতে ইসলাম সর্বত্রই বিজয় লাভ করার পর মুহম্মদ (সঃ) এর অনুমতি ক্রমে লাত, উজ্জা ও মানাতের মন্দির ধ্বংস করেন যথাক্রমে আবু সুফিয়ান ইবনে হার্বে, খালিদ বিন ওয়ালিদ ও সাদ ইবনে যায়িদ আল আশহালি।