মূর্তিপূজার ইতিহাস

মানব পিতা আদম (আঃ)এর মৃত্যুর পর বেশ কয়েকজন বুজুর্গ ব্যক্তির আগমন ঘটে। তাঁরা ছিলেন ওয়াদ, সুয়া, ইয়াগুন,ইয়াউক ও নসর ।
কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর জনসাধারণ এতটাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে যে প্রতিদিন কবরের কাছে এসে কান্নাকাটি করতে লাগলো।

এ সময় একজনের মাথায় ভাবনা আসে যদি তাদের প্রতিকৃতি বানিয়ে রাখা যায় তবে মৃত ব্যক্তিদের তারা বেশি বেশি স্মরণ করতে পারবে এবং চিরকাল তাদেরকে মনের মাঝে ধারণ করা যাবে।

এরপর ধীরে ধীরে এক একটা সম্প্রদায় এক একজন বুজুর্গ মানুষকে তাদের নিজেদের জন্য নির্ধারণ করে নেয়।

ওয়াদ নির্ধারিত হয়ে যান বনু কালবের গোত্রের জন্য, সুয়া হয়ে যান বনু হোজয়েলের জন্য।

ইয়াগুন আর ইয়াউক হয়ে যান যথাক্রমে বনু গুত্বায়েন ও বনু হামদান গোত্রের পূজনীয়।

হিমাইয়া গোত্রের বনু জি -কালার জন্য নির্ধারিত হয়ে যান নসর।

বুজুর্গ ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান, ভক্তি, ভালোবাসা প্রকাশ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সম্প্রদায়গুলো তাদের কবরের উপর মূর্তি তৈরি করে বসে।

এরপর আরো কিছুদিন পর পরকালে মুক্তির উসিলা হিসেবে তাদের সহযোগিতা কামনা করতে শুরু করে।
আর এভাবেই বংশ পরাম্পরায় চলতে থাকে এ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। তারা ছিটকে পরে ধর্মের মূল উদ্দেশ্য থেকে বহুদূরে।

এমনই পরিস্থিতিতে পরগম্বর হিসেবে আসেন নূহ (আঃ)।
পরকালের মুক্তির জন্য আসলে আল্লাহ ছাড়া কারোর সুপারিশ গ্রহণযোগ্য নয়। নবী তাঁর সম্প্রদায়কে এ বিভ্রান্ত থেকে মুক্ত হওয়ার আহবান জানিয়েছে বহুবার।

যার সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে, আল- কোরআনে।
সুরা নূহঃ আয়াত ২১-২৩

নূহ বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো আমার কথা প্রত্যাখ্যান করছে।
তারা অনুসরণ করছে ধনজনসমৃদ্ধ প্রভাবশালীদের, যাদের সমৃদ্ধি তাদের ক্ষতির পরিমাণই বাড়াচ্ছে। ওরা সত্যের বিরুদ্ধে ভয়ানক ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে।
ওরা ওদের সম্প্রদায়কে বলছে, তোমরা তোমাদের উপাস্য দেবদেবীকে কখনো পরিত্যাগ কোরো না, পরিত্যাগ কোরো না ওয়াদ, সুয়া, ইয়াগুন, ইয়াউক ও নসরকে।

তার তখন থেকে আজ অবধি চলে আসছে মূর্তি পূজা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *